ছাতকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুষ্টু তদারকির অভাবে ব্যাপকহারে চলছে কাবিখা, কাবিটা, এলজিএসপিসহ বিভিন্ন সরকারি বরাদ্ধ আত্মসাতের মহোৎসব। এর সাথে জড়িতরা নিজেদের গাঁেয় সরকারি দলের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে বরাদ্ধের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করে যাচ্ছে। অনেক সময় দেখা গেছে প্রকল্প কমিটি কাজ না করেই ভূঁয়া বিল-ভাউচারে মালামাল উত্তোলন করে আত্মসাত করেন। কখনো অত্যন্ত নি¤œমানের উপকরণ দিয়ে সিকিভাগ কাজ করলেও বরাদ্ধের টাকা হাতিয়ে নেন। এসব নি¤œমানের কাজ দীর্ঘস্থায়ী না হওয়ায় সরকার ও জনসাধারণ উভয়ই ক্ষতির সম্মূখিন হচ্ছেন। এতে নিজেদের ব্যাংক ব্যালেঞ্ছ স্ফীত সহ লাভবান হচ্ছে আত্মসাতকারিরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাঠ পর্যায়ে সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের সাথে জড়িত রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, পাতি নেতা ও তাদের দোসররা। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ন্যায় নিষ্টা ও সততার ভিত্তিতে এলাকার উন্নয়ন করার অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়ে তাদের ভোট আদায় করেন। সরল বিশ্বাসে মানুষ তাদেরকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করে। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর জনপ্রতিনিধিদের প্রকৃত চেহারা উন্মোচন হয়ে পড়ে। অমুকের চরিত্র ফুলের মতো আর পবিত্র থাকেনা। এলাকার উন্নয়নের জন্যে আসা সরকারি প্রকল্পের টাকা দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে নিজেদের ভূঁরিভোজসহ বসবাসের জন্যে অট্টালিকা গড়া হয়। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, হতদরিদ্রদের মূখের অন্ন ও তারা কেড়ে নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় এলজিএসপি, ১০টাকা কেজির চাল, ঢেউটিন, বিভিন্ন ভাতা টাকাসহ হতদরিদ্রদের মালামাল লুঠে-পুটে খাচ্ছে জনপ্রতিনিধিরা। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দূর্নীতি হচ্ছে, ইউনিয়নের মেম্বার-চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় সরকার বিভাগে। তবে এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইসচেয়ারম্যানরা যে একেবারেই ফুলের মতো একথা কেউ বিশ্বাস করতে রাজি হচ্ছেনা। এসব দূর্নীতি থেকে বাদ পড়েননি মুক্তিযোদ্ধারাও। চরমহহল্লা ইউনিয়নবাসী উন্নয়ন প্রত্যাশা বুকে নিয়ে নির্বাচিত করেন মুক্তিযোদ্ধা কদর মিয়াকে। কিন্তু তাদের প্রত্যাশায় গুড়ে বালি দিয়ে গত মেয়াদে তিনি ইউনিয়নে দূর্নীতি-অপকর্ম ও আত্মসাতের স্বর্গরাজ্য গড়ে তোলেন। কিন্তু এলাকার সুচতুর জনগন কখনও নিজেরা ঠকেনা তারা সব সময় মানুষকে ঠকায়। ফলশ্রুতিতে এবারের নির্বাচনে কদর মিয়া বিপুল ভোটের ব্যবধানে শোচনীয় পরাজয় বরন করেন। মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে নির্বাচনে। এখানে তারা নির্বাচিত করেন মাষ্টার আবুল হাসনাতকে। তিনির ভাল-মন্দ যাচাই হবে আগামী নির্বাচনে। জানা গেছে, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধ্ াকদর মিয়া ২০১৫সালের ২আগষ্ট স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের কাবিখা প্রজেক্টের ২য় পর্বের বিশেষ বরাদ্ধ ১৯মেঃটন চাল উত্তোলন করেন। ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে সোলার বিদ্যুৎ স্থাপনের জন্যে এই প্রকল্পটি বরাদ্ধ দেয়া হয়। কিন্তু সোলার বিদ্যুৎ স্থাপনসহ প্রায় ৫লক্ষাধিক টাকা প্রকল্পে কোন কাজ না করেই টাকা আত্মসাত করেন ইউপি চেয়ারম্যান। এক্ষেত্রে সমুদয় টাকার ব্যয় খাতের ভূঁয়া মাষ্টাররোল অফিসে দাখিল করেছেন বলে জানা গেছে। রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তির কারনে কদর মিয়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে আত্মসাতকৃত প্রকল্পে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা। ফলে ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে এদের অব্যাহত দূর্নীতি-অকর্ম। এতে সরকার ও জনসাধারণ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এব্যাপারে গত ১৪নভেম্বর সিলেট দূর্নীতি দমন কমিশনে স্থানীয় খদিরিচর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুছের পুত্র সিরাজুল ইসলাম একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযুক্ত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কদর মিয়া নিজেই এই প্রকল্পের চেয়ারম্যান দাবি করে বলেন, বরাদ্ধের টাকা দিয়ে আগামি সপ্তাহে সোলার স্থাপনের কাজ শুরু করা হবে। ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত জানান, এবিষয়ে এলাকায় ব্যাপক-আলেচনা সমালোচনা চলছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মামুন আহমদকে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।